আমেরিকায় উচ্চতর শিক্ষার ইচ্ছে বাংলাদেশের উঠতি বয়সী অনেক ছেলেমেয়ের থাকে । কিন্তু সঠিক দিক নির্দশনার অভাবে ঠিক সময় ঠিক পদক্ষেপ নিতে পারে না অনেকে । আমার এই লেখাটি এই প্রসেসকে আরেকটু সহজ করার লক্ষ্যে তৈরী । চেষ্টা করবো সবকিছু সহজ করে বুঝিয়ে বলতে । তবু যদি কারো কাছে কোন অস্পষ্টতা লাগে- যেকোন সময়ে আমাদের ফোন (০১৬৪৬১০২১৩০) করতে যোগাযোগ পারেন ।
একসময় শিক্ষা দীক্ষায় চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য ছিল মানুষের লক্ষ্য । ধীরে ধীরে সেরা শিক্ষাক্ষেত্রের মুকুটটা যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে ছিনিয়ে নিয়েছে সেটা আমার জানা নেই । তবে আজকের এই বিশ্বায়নের যুগে শিক্ষা দীক্ষায় প্রতিযোগিতা কম চলছে না । তাই কোন দেশের শিক্ষাকেই আমি ছোট করি না । তবুও যুক্তরাষ্ট্রের ডিগ্রীর দিকে অনেক ঝোক মানুষের । সবাই যুক্তরাষ্ট্রের পড়তে যেতে চায় ।
কারন হিসেবে আমি যেগুলো চিহ্নিত করেছি সেগুলোর মধ্যে প্রথমেই আসে ভাল চাকুরী চট করে পেয়ে যাবার নিশ্চয়তা । মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বছর প্রতি ৫০-৬০ হাজার ডলারের চাকুরী পেয়ে গেলে জীবনে আর কি চাইবার থাকে । অন্যান্য ক্ষেত্রেও বেশ ভালো অবস্থা । বিশেষ করে ইলেকট্রিক্যাল আর কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ আরো ভাল বেতন। তবে তুলনা মূলক ভাবে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রতিযোগিতা অনেক বেশী । চাকুরীর বাজার হিসেবে পড়াশোনার অন্যান্য ক্ষেত্রও কিন্তু খুব ভালো । তবে আর্টস বা কর্মাসে পড়তে আসলে কিন্তু ইংরেজী কমিউনিকেশনটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।
তবে যে বিষয়েই পড়ার চিন্তা করুন না কেন, বাজার যাচাই করে নিতে ভুলবেন না ।
বাইরে পড়তে চাইলে আরেকটা টেনশন থাকে সেটা হলো টিউশন পে করা যাবে কিভাবে? আমেরিকায় এ ব্যাপারে সুযোগের অভাব নেই । ইউনিভার্সিটিগুলোতে টিচিং , রিসার্চ, গ্রাজুয়েট এসিসটেন্টশীপ মেলা তেমন দুষ্কর নয়। তার উপর আছে ঘন্টাচুক্তিতে চাকুরী, বাইরে বিভিন্ন দোকানে চাকুরী। আর প্রোগ্রামীং বা ওয়েব ডেভলপমেন্টের কাজ জানা থাকলে তো ‘লারে লাপপা’ । টিচিং এসিসটেন্টদেরকে বিভিন্ন কোর্সের খাতা দেখা, ছাত্রদের সাহায্য করার কাজ করতে হয় । রিসার্চ এসিসটেন্টদেরকে কোন প্রফেসরের আওতায় কোন গবেষনা জায়ঃ সাহায্য করতে হয় । এই দুইধরনের কাজে ইউনিভার্সিটি থেকে টিউশন পুরোটা দিয়ে দেয়, আর থাকা খাওয়ার জন্য মাসে বারশ থেকে পনেরশ ডলার বেতন । তবে বিভিন্ন দোকানে চাকুরীটা সত্যিই খুব কষ্টকর এবং আমাদের বাঙ্গালী মানসিকতার উপর বড় ধকল ।
আরেকটা ব্যাপার হলো আন্ডারর্গ্যাজুয়েট লেভেলে কিন্তু এইসব চাকুরী মেলা প্রায় অসম্ভব । তাই এক্ষেত্রে বেশীরভাগকে বাইরে ঘন্টা চুক্তির কাজ করতে হয় । কিন্তু মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে আসলে এসব ফান্ডিং পাওয়া বেশ সহজ হয়ে যায় । তাই যত বড় ডিগ্রীতে এনরোল করবেন তত সুযোগ বেশী ।
এরপরে আসে শিক্ষাদীক্ষা । আমেরিকার শিক্ষা পদ্ধতি সারা দুনিয়ায় স্বীকৃত। তাই এখান থেকে একটা ডিগ্রী বাগাতে পারলে পৃথিবীর যেকোন জায়গায় সেটার স্বীকৃতি থাকবে বলাই বাহুল্য। গবেষনা, বা সাধারন পড়াশোনা এত বাস্তব কাজের সাথে সংপৃক্ত যে চাকুরীর ক্ষেত্রে কোন অসুবিধাই হয়না । যে সমস্ত বিষয়ের বাস্তব এপ্লিকেশন নেই সেসব জিনিস এরা সিলেবাস থেকে কবেই বের করে দিয়েছে! এব্যাপারে এক প্রফেসরের একটা কথা মনে পড়ল । তিনি বলছিলেন, ‘আমরা এখানে শিক্ষা প্রদান করি না, শিক্ষা বিক্রী করি । তাই যারা শিক্ষা কিনছে তারা যেন না ঠকে সেটা আমাদের দেখতে হয় ।
‘তাছাড়া আরো একটা কিছু কিছু কারন আছে। তার মধ্যে একটা হল এখানকার সমাজ ব্যবস্থা। অরূপ সেদিন যেমনটা বলল, মানুষের ব্যবহার এখানে এত ভাল! সকাল বেলা দেখা হলে চেনে না জানে না এমন লোকও কি সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বলে গুড মনিং । বিদায়ের সময় কি সুন্দর করে বলে হ্যাভ অ্যা নাইস ডে। এই সমস্ত সোশ্যাল এলিমেন্ট সত্যিই অতুলনীয়।
তাছাড়া জীবন যাপনে, ভাল এবং সেরা চিকিৎসার নিশ্চয়তা, খাবার দাবার শতকরা ভাগ ভাল হবার নিশ্চয়তা, পৃথিবীর সেরা যে কোন পন্য বা সেবা পাবার নিশ্চয়তা এসব তো আছেই । আর আপনি আপনার ধর্ম কর্ম নিয়ে আপনার মতো করে বাঁচুন আপনাকে কেউ ঘাঁটাবে না, বরং আপনাকে সাহায্যই করবে । আগে আমেরিকান সমাজকে মিশ্র সমাজ ব্যবস্থা বলা হত । কিন্তু সব জাতির লোক এখানে তাদের স্বাতর্ন্ত্য নিয়ে থাকতে পারে বলে এখন এটাকে ‘সালাদ সোসাইটি’ বলা হয় । এই সমস্ত বিষয় ইউরোপের বা এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক আকর্ষণীয় বলে আমেরিকা সত্যিই উচ্চতর শিক্ষার জন্য একটি ভাল পছন্দ।
এখানকার উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের সময়কাল আমাদের দেশের মতোই। ব্যাচেলর কোর্স করতে ৩-৪ বছর আর মাস্টার্স করতে ২ বছর লাগে। তবে পিএইচডি’র সময়সীমা রিসার্চের ফলাফলের ওপর নির্ভর করে। তাছাড়া এখানে নন- ডিগ্রি প্রোগ্রামেরও আয়োজন করা হয়। আমেরিকার উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে নিম্নলিখিত ডিগ্রীগুলো প্রদান করা হয়:
এসোসিয়েট ডিগ্রি: কমপক্ষে ১২ বছরের শিক্ষাবর্ষ (hsc) শেষে এসোসিয়েট ডিগ্রিতে ভর্তি হতে হয়। কোর্সের মেয়াদ ২ বছর ।
ব্যাচেলর ডিগ্রি: এখানেও ভর্তির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১২ বছরের শিক্ষাবর্ষর্ (hsc) অতিক্রম করতে হয়। কোর্সের মেয়াদ চার বছর ।
মাস্টার্স ডিগ্রি: কমপক্ষে ১৬ বছরের শিক্ষাবর্ষ অতিক্রমের পর মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য আবেদন করা যায়। কোর্সের মেয়াদ দুই বছর ।
ডক্টরেট ডিগ্রি: মাস্টার্স অথবা এমফিল পর্যায়ের শিক্ষাবর্ষ শেষে ডক্টরেট করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ কোর্স শেষ করতে সাধারণত তিন থেকে ছয় বছর লাগে ।
স্পিপ্রং সেমিষ্টার: জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত
সামার সেমিষ্টার: মে থেকে জুলাই পর্যন্ত
ফল সেমিষ্টার: আগষ্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত
যুক্তরাষ্ট্রের্ লেখাপড়ার ভাষা ইংরেজি। তবে ভাষার ওপর দক্ষতা ও যোগ্যতা যাচাই করার জন্য বিভিন্ন SAT, ACT, GMAT, GRE, IELTS, TOEFL, TSE ইত্যাদি। যারা অনার্স করতে চান, তাদের অবশ্যই SAT অথবা ACT পরীক্ষা দিতে হবে। বর্তমান মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য GRE টেস্টের নাম্বারটা গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। এসব টেস্টের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন:
আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে গেলেই কিছু ব্যাপার জানতে হবে। পুরো লেখায় একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে এখানে সাধারণত আর অধিকাংশ নিয়ে আলোচনা করে যাবো। কারণ আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রত্যেকটিতে নিয়ম কানুন আলাদা হওয়ায় প্রত্যেকটিতে আলাদা আলাদা কিছু নিয়ম থাকে। সেগুলোর পরেও সবগুলোতে সহজ ভাষায় একটা সামঞ্জস্য আছে। সেই সামঞ্জস্যের অংশটুকুন নিয়ে লেখা হচ্ছে। তারপরেও যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এপ্লাই করতে চাচ্ছেন-তাদের স্পেশাল কোন নিয়মকানুন আছে কিনা সেটা তাদের ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে অনুরোধ করবো।
আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া আমাদের ভর্তি প্রক্রিয়ার চেয়ে অনেক অনেক অনেক আলাদা।
প্রথমত, আসলে আমাদের দেশে যেমন একটা নির্দিষ্ট পরীক্ষায় ভালো করে সাথে সাথে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যাওয়া যায়-ওদের দেশের পদ্ধতিটা ঠিক এমন নয় । ভর্তির জন্য কিছু পরীক্ষা দেয়া লাগে বটে-তবে সেই পরীক্ষাগুলো ভর্তির অনেক অনেকগুলো অনুষঙ্গের মধ্যে একটা অনুষঙ্গ মাত্র-আর কিছুই নয় । পরীক্ষার রেজাল্ট যতটা গুরুত্বপূর্ণ-এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি, এডমিশন এসে, লেটার অব রেকমেন্ডেশন ইত্যাদি সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ । আমি এমন অনেককেই চিনি যারা পরীক্ষায় মোটামুটি একটা স্কোর নিয়েও বাকি অনুষঙ্গগুলোর জোরে অনেক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে ।
দ্বিতীয়ত, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াটি আসলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি করে নেয় কোন সাবজেক্টে ভর্তি করে না। ওদের আন্ডারগ্রাজুয়েটে প্রথম দুই বছর মূলত সবাই মোটামোটি একই জিনিস পড়ে। এই দুইবছর চাইলে কেউ কোন নির্দিষ্ট সাবজেক্ট বাছাই নাও করতে পারে। ঘুরে ঘুরে সব সাবজেক্ট পড়ে পড়ে দেখতে পারে। এরপর দুইবছর পরে গিয়ে মেজর ডিক্লেয়ার করতে হয় অর্থাৎ যে সাবজেক্টে স্পেশালাইজ করতে চাও তার নাম বলতে হয়। কাজেই কোন ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাওয়া মানেই মোটামুটিভাবে সব সাবজেক্টে পড়তে পারার স্বাধীনতা। তবে বিশেষ প্রতিষ্ঠানে বিশেষ বাধ্যবাধকতা থাকতে পারে। বিশেষ নিয়মকানুনগুল সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে হবে।
তৃতীয়ত, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে চলে যাওয়া যায়। ব্যাপারটা খুব কঠিন না। কাজেই সুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরোনোর একটা উপায় থাকছে এবং এমন অনেককেই আমি চিনি যারা মোটামুটি গোছের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পরে অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে পাস করেছে ।
অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল স্কলারশীপ দেয় আর সেইগুলোর কয়েকটার নাম নিচে বললাম। বলে রাখি যে এই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ফুল স্কলারশীপে পড়ছে এমন মানুষদের আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি-কাজেই তথ্যে ভুল হবার সম্ভাবনা কম।
এর বাইরেও আরো অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল স্কলারশীপ দেয় যেগুলোর নাম একটু ঘাটাঘাটি করলে পাওয়া যাবে। এখন প্রশ্ন হলো কি দেখে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই ফুল স্কলারশীপ বা এডমিশন ডিসিশনগুলো দেয়। আসলে একেক বিশ্ববিদ্যালয় একে জিনিস দেখলেও মোটামুটি একটা কমন লাইনআপ দেয়া যেতে পারে । সেইটার একটা লিস্টঃ
১) কমন এপ্লিকেশনের এসে
২) SAT আর SAT Subject Test এবং IELTS বা TOFEL
৩) একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
৪) এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিস
৫) লেটার অব রেকমেন্ডেশন
প্রায় সব বিষয়েই যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া যায়। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থী সেখানে গবেষণামূলক বিষয় বা ইঞ্জিনিয়ারিং করতে যায়। উলেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো- ফিজিক্স, ম্যাথ, কেমিস্ট্রি, বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন, আর্টস, সোশ্যাল সায়েন্স, আইন, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি। এছাড়া মেডিক্যাল সায়েন্সের নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর গবেষণা করা যায়। আপনার কাঙ্খিত উচ্চশিক্ষার বিষয় সম্পর্কে আরো বেশি জানতে ভিজিট করুন।
আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে কোটি খানেক টাকা লাগে না। অনেকের ধারণা আছে যে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেলে মহা বড়লোক হওয়া লাগে আর ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা দেখানো লাগে। আসলে ব্যাপারটা এরকম নয়। নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের কেউ যদি সেই পর্যায়ের মেধাবী হয়-তাহলে ফুল স্কলারশীপে আমেরিকায় পড়তে পারে। হ্যাঁ-এটা সত্যি যে গ্রাজুয়েট পর্যায়ের তুলনায় আন্ডারগ্রাজুয়েটে ফুল স্কলারশীপের সংখ্যা অনেক কম আর বেশ প্রতিযোগিতামূলক-তবে ব্যাপারটা অসম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়ার মান উন্নত হওয়ার পাশাপাশি খরচ বেশি। চার বছরের কোর্স করতে টিউশন ফি ১৫-২০ লাখ টাকা। তাছাড়া মাস্টার্স কোর্স করতে টার্ম প্রতি প্রায় ৩০-৭০ হাজার টাকা মত লাগবে। এ সংকান্ত আরো বেশি জানতে ভিজিট করুন
আন্ডারর্গ্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নকালীন চাকুরি করার কোনো সুযোগ নেই, তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ক্যাম্পাসভিত্তিক চাকুরি করা যায়। বাংলাদেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে ঘন্টায় ছয় থেকে ২৫ ডলার উপার্জন করতে পারেন। ভাষাগত দক্ষতা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ থাকলে অফিসিয়াল কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন। কম আয়ের কাজগুলো এখানেও তুলনামূলক বেশি পরিশ্রমের। আছে স্কলারশিপ পাওয়ার ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের সর্বশেষ স্কলারশিপের ব্যাপারে জানতে পারেন। বিস্তারিত জানতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসেও যোগাযোগ করতে পারেন। তবে স্কলারশিপের জন্য অবশ্যই বিগত পরীক্ষার ফলাফল ও ভর্তির আগে তারা যেসব পরীক্ষা নেবে তাতে নির্দিষ্ট মার্কস পেতে হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া
আপনার কাঙ্খিত বিভাগে আবেদনপত্র জমা দেয়ার শেষ সময়সীমা প্রথমে যাচাই করুন।
আবেদন ফরম ও অন্যান্য তথ্যের জন্য সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন অফিস বরাবর লিখুন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকেও আপনি আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে পারেন।
অ্যাডমিশন অফিস আপনাকে ভর্তি সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য জানাবে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তির পদ্ধতি চালু আছে।
আপনি অন্তত: ১ বৎসর সময় হাতে রেখে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়াটি শুরু করুন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাধারণত ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন।
ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
পূরণকৃত আবেদনপত্র
আবেদন ফি পরিশোধের প্রমানপত্র
পূর্বতন শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের ইংরেজী সংস্করন। শুধুমাত্র অনুমোদিত যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতিলিখন স¤পন্ন হতে হবে।
স্কুল/কলেজের ছাড়পত্র
IELTS / টোফেল পরীক্ষার ফলাফলের সনদ
প্রয়োজন সাপেক্ষে জি আর ই, স্যাট বা জি-ম্যাট এর ফলাফলের সনদ।
পাসপোর্টের ফটোকপি
ভর্তি এবং অতপর
আপনি যদি অনার্স কোর্স করতে যেতে চান, তবে SAT অথবা ACT পরীক্ষার পর আপনার পছন্দের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ভর্তিফরম সংগ্রহসহ যাবতীয় নিয়ম জেনে নিন। আর আপনি যদি গবেষণার কোনো বিষয়ে মাস্টার্স বা পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হতে চান, তাহলে যার অধীনে আপনি গবেষণা করতে আগ্রহী, তাকে নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা, থিসিস দিয়ে মোটিভেশান চালান। স্টেটমেন্ট অব মোটিভেশান সিভি পাঠান। ঘরে বসেই তাদের সাথে ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়ান। অত:পর সেখান থেকে সাড়া পেলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ভিসা সংগ্রহ করুন।
থাকার ব্যবস্থা
ভর্তির পর অবশ্যই ক্লাস শুরুর আগেই সেখানে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব হোস্টেল আছে, তারপরও অনেকেই মাসিক ব্যয়, যাতায়াত খরচ ও যাবতীয় সুবিধা বিবেচনা করে হোটেল, মোটেল, যুব হোস্টেল, আন্তর্জাতিক হাউজিং, এমনকি সেখানকার স্থানীয় ফ্যামিলির সাথেও থাকেন।
সেরা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ
মনে রাখা ভালো, যেহেতু বিদেশে প্রচুর প্রতিযোগিতা, তাই নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করতে হবে। নিম্নে কিছু বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট দেয়া হলো। আগ্রহীরা ভিজিট করতে পারেন।
www.mit.edu
www.harvard.edu
www.yale.edu
www.stanford.edu
www.caltech.edu
www.upenn.edu