জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের প্রক্রিয়া ও বৃত্তি
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার প্রায় ৩০০ ইনস্টিটিউশন রয়েছে । এর মধ্যে ৮২ টিবিশ্ববিদ্যালয়, ১৩৬ টি অ্যাপ্লাইড বিশ্ববিদ্যালয় এবং মিউজিক ও ফাইন আর্ট বিষয়ক ৪৬টি কলেজ রয়েছে । এবং প্রতিষ্ঠানে ২০লাখ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ১২ শতাংশ বিদেশী । বিদেশীদের মধ্যে আবার ৯ শতাংশই পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা জার্মানিতে শেষ করেছেন। গত ১৫ বছরে জার্মানিতে বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যাদ্বিগুণ বেড়েছে । জার্মানীর বিশ্ববিদ্যালয় জার্মানিতে মূলত তিন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় আছে ।
প্রথমত, অ্যাপ্লায়েড বিশ্ববিদ্যালয় (Applied Science University)। যেখানে ছাত্রদের মূলত চাকরি অরিয়েন্টেড বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়। গবেষণামূলক কাজ এখানে হয় না বললেই চলে।
দ্বিতীয়ত, টেকনিক্যাল বা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (Technical University), যেখানে প্রকৌশলসহ বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলো পড়ানো হয়। সাথে সাথে রয়েছে ব্যাপক গবেষণা মূলক প্রকল্প।
তৃতীয়, ভাগে আছে নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়, যেগুলো মূলত ইউনি (UNI) হিসেবে পরিচিত। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, কলা, বাণিজ্য সহ সব অনুষদই পড়ানো হয়। আকারে ইউনিগুলো বড় হয়ে থাকে।
অনেক ইংলিশ ভাষাভাষী দেশে ছাত্রবৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি নিজ অর্থায়নে (Self Finance) পিএইচডি করার সুযোগ থাকঔের জার্মানি সহ অনেক ইউরোপীয় দেশ এই নিয়মের ব্যতিক্রম। এখানে পিএইচডি পর্যায়ের সব ছাত্রই প্রায় চাকরির সমপরিমাণ বৃত্তি বা বেতন পেয়ে থাকেন। কিন্তু এসব সুযোগ বিজ্ঞান বা প্রকৌশল বিষয়ের ছাত্রদের জন্যই বেশি।
জার্মানির উল্লেখ যোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলো হচ্ছে লুদভিকম্যাক্সিমিলিয়ান ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ, ফ্রিইউনিভার্সিটি অব বার্লিন, হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি, উলম ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাডহনেফ প্রভৃতি।
কখন যাবেন জার্মানী
জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য আসতে পারেন কয়েক ভাবে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে কেউ চাইলে তাকে জার্মান ভাষা কোর্সে ভর্তি হতে হবে। খুব কম সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট পর্যায়ে ইংলিশ ভাষায় কোর্স চালু আছে। প্রথম চেষ্টা করতে পারেন ইংলিশ ভাষায় পড়ানো হয় এমন কোনো Subject এ ভর্তি হতে। তানা পেলে ভাবে ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তি হওয়া যেতে পারে।
প্রথমত, বাংলাদেশে জার্মান ভাষার কিছু প্রাথমিক জ্ঞান নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য Apply করুন। ভর্তি হতে পারলে এখানে এসে মূল কোর্স শুরুর আগে ছয় থেকে এক বছরের মধ্যে জার্মান ভাষার বাকি কোর্স করে ফেলুন। অন্য ভাবে ও আসা যায়, আপনি সরাসরি বাংলাদেশ থেকে জার্মানির যেকোনো ভাষা শিক্ষা কেন্দ্রে Apply করুন। ভর্তি হতে পারলে ভাষা শিক্ষার জন্য ভিসা পাবেন। এখানে এসে ভাষা শিক্ষা সমাপ্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার পছন্দের Subject-এ ভর্তি হতে পারেন। তবে এই প্রক্রিয়া বেশ Costly. মাস্টার্সে ভর্তির জন্য প্রথমে ডাড (daad.de)-এর ওয়েব সাইট থেকে কোনো কোনো ভার্সিটিতে আপনার সাবজেক্ট আছে তার তালিকা তৈরি করুন। আপনার যোগ্যতা (যেমন রেজাল্ট, TOEFL/IELTS ইত্যাদি) পুরোপুরি খাপ না খেলেও নির্দ্বিধায় Apply করুন।
পিএইচডির জন্য সরাসরি ধঢ়ঢ়ষু করতে পারেন। ভার্সিটির ওয়েব সাইট থেকে আপনার সাবজেক্ট সংশ্লিষ্ট ফ্যাকাল্টির ইনস্টিটিউট গুলোর তালিকা তৈরি করুন। ইনস্টিটিউট প্রফেসরকে সরাসরি বসধরষ করুন। জানতে চান পিএইচডির সুযোগ আছে কিনা। যদি ও জার্মান বা ইউরোপীয় মাস্টার্স ডিগ্রি না থাকলে সরাসরি পিএইচডিতে নিতে চাননা। প্রফেসর যদি রাজি হন সেক্ষেত্রে বুঝবেন তার পর্যাপ্ত ফান্ড আছে আপনার জন্য। আরেকটা কথা বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশে অনেকের একটা ভুল ধারণা হচ্ছে, উচ্চশিক্ষা করতে হবে স্কলারশিপ নিয়ে, আর তা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য। পিএইচডির জন্য স্কলারশিপ জরুরি।
উচ্চশিক্ষার তথ্য
জার্মানির উচ্চশিক্ষা সর্ম্পকে তথ্য পাবেন কিভাবে? প্রথমকথা, আপনাকে ইন্টারনেটে লেগে থাকতে হবে। নিয়মিত ইন্টারনেটে বসা, সার্চ করা ও ব্যাপক যোগাযোগ অত্যাবশ্যক। ইন্টারনেটে আপনার পরিচিতি সার্কেল বাড়াতে হবে। জার্মানি ও এর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি তথ্য, ছাত্রবৃত্তি সহ অন্যান্য তথ্যেও জন্য গুরুত্বপূর্ণ উৎস গুলোর মধ্যে জার্মান একাডেমিক একচেঞ্জসার্ভিস ( https://www.daad.de/en) গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিভিন্ন সাবজেক্টের তালিকা ও স্কলারশিপের তথ্য পাবেন। স্কলারশিপের জন্য জার্মান সায়েন্স ফাউন্ডেশন DFG,( http://dfg.de/en ) জার্মান শিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয় BMBF,( http://www.bmbf.de) উল্লেখ যোগ্য। এসব সংস্থার ওয়েব সাইটের সংশ্লিষ্ট ইংলিশ সংস্করণে আপনাকে ব্যাপক সার্চ করতে হবে।
বৃত্তির সুযোগ
জার্মান বার্তা সংস্থা ডয়েচেভেলের ওয়েব সাইট থেকে জানা যায়, প্রতি বছর আড়াই লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী এবং ২৩ হাজার পিএইচডি গবেষক জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি হন ৷ এই বিশাল সংখ্যার শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ শতাংশ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকেন ৷ ডিএএডি বা জার্মান ছাত্রবিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতি বছর অনেক শিক্ষার্থী জার্মানি পড়াশোনার সুযোগ পান৷ বর্তমানে ৪৫ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি ৷ এই প্রতিষ্ঠানের বৃত্তি ভোগীদের ৭০ শতাংশই আসেন বিদেশ থেকে ৷ স্নাতক কোর্সের শিক্ষার্থীরা মাসে ৬৫০ ইউরো, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা ৭৫০ ইউরো আর পিএইচডি গবেষকেরা এক হাজার ইউরোপেয়ে থাকেন বৃত্তি হিসেবে৷ তবে স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সুযোগ সীমিত। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বৃত্তি নিয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য জার্মানিতে যান শিক্ষার্থীরা।
জার্মানিতে পড়ার বিষয়
জার্মানিতে বর্তমানে ৪৫০ টির বেশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গভর্ন্যান্স, পলিটিক্যাল সায়েন্স, অ্যাড ভান্সড ম্যাটারিয়ালস, অ্যাড ভান্সড অনকোলজি, কমিউনিকেশন টেকনোলজি, এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ফিন্যান্স, মলিকিউলার সায়েন্স, বিভিন্ন ভাষা বিষয়ে পড়াশোনা, পদার্থ বিজ্ঞান, গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স সহ প্রকৌশল ও জীব বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে।
আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট থেকে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের সব প্রক্রিয়া ও বৃত্তি সম্পর্কে জানা যায়। কাছ থেকে সরাসরি পরামর্শ নিতে পারেন। জার্মানির শিক্ষা ব্যবস্থা, দৈনন্দিন জীবন যাপন,পড়ালেখা-চাকরির সুবিধা সহ যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাচ্ছে Study in Germany এ সাইট থেকে।
বিষয় নির্ধারণ
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিষয় নির্ধারণের ব্যাপারে আপনাকে বুদ্ধিমান হতে হবে।সব বিষয়ে (Subject) ফান্ড পর্যাপ্ত নয়।বাংলাদেশ থেকে এক জন ছাত্র যা ব্যবহারিক জ্ঞান নিয়ে আসে, তা জার্মানির মতো হাইটেক দেশের জন্য পর্যাপ্ত নয়।এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের নতুন জিনিস জানা এবং শেখার পৃহা থাকতে হবে।ভালো বিষয়, ভালো বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্র বৃত্তির জন্য যথেষ্ট ধৈর্য নিয়ে ইন্টানেটে সার্চ করা এবং যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতে হবে। বিগত বছর গুলোতে যেসব ছাত্র উচ্চ শিক্ষার জন্য জার্মানিতে পাড়ি জমিয়েছে তার প্রায় ৯৫ শতাংশ ছাত্রই সফল ভাবে উচ্চশিক্ষা সমাপ্ত করে চাকরি, পিএইচডি, পোস্ট ডক্টরেট গবেষণা বা বিভিন্ন গবেষণা কাজে নিয়োজিত আছেন। মজার ব্যাপার হলো সংখ্যায় কম হলে ও বাংলাদেশী ছাত্ররা পার্শ্ববর্তী ভারত বা পাকিস্তানের ছাত্রদের তুলনায় বেশি গুণ সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে। বর্তমানে প্রায় অর্ধ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক বিষয়ে আন্তর্জাতিক মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্স চালু আছে। ধীরে ধীরে সব বিশ্ববিদ্যালয় একাধিক বিষয়ে ইংরেজি মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাস্টার্স কোর্স চালুর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রদের দৈনন্দিন কাজের প্রয়োজনে ব্যবহারিক জার্মান ভাষা শিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কোর্স গুলোতে জার্মান ভাষার কোর্স বিনা মূল্যে শেখানো হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে খণ্ড কালীন ছাত্র চাকরি বা পিএইচডি গবেষণার জন্য জার্মান ভাষাতে মন একটা জরুরি নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পার্ট টাইম কাজের জন্য জার্মান ভাষা জানা জরুরি।
খন্ড কালীন কাজ
একজন ছাত্র পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিমাসে ৮৬ ঘণ্টা কাজের অনুমতি পায়। ৫০-৬০ ঘণ্টা পার্টটাইম কাজ পেলেই মোটামুটি খরচ চালানো যায়। এছাড়া ছয় মাস অর্ধ দিবস বা তিন মাস পূর্ণ দিবস কাজের অনুমতি ছাত্র ভিসাতে দেয়া হয়। কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা (যেমন: কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, ওয়েব পেজ ডিজাইন বা অন্যান্য) থাকলে খণ্ড কালীন ছাত্র চাকরি বা পড়াশোনা শেষ করার পর চাকরি পেতে যথেষ্ট সহায়ক হয়।
চাকরি
চাকরির ক্ষেত্রে জার্মান ভাষা জানা থাকলে বাড়তি সুবিধা এবং চাকরি পাওয়া সহজ হয়। জার্মানিতে অবস্থিত বিভিন্ন বহু জাতিক কোম্পানি গুলোতে জার্মান ভাষা জানা জরুরি নয়। এব্যাপারে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ প্রস্তুত কারী বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান এর ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সাইফুল্লাহ জানান, জার্মানি ভাষা জানা থাকলে এখানে চাকরির সম্ভাবনা ৯০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশের ছাত্ররা জার্মানি এবং এর শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানেনা। এখানে টিউশন ফি ছাড়া পড়াশোনা করা যায়, উপরন্তু স্কলারশিপের সুযোগ ও প্রচুর। আমার স্ত্রী জার্মানিতে এসে সিমেন্স কোম্পানির স্কলারশিপ অর্জন করে। এখানের সুযোগ গুলো সম্পর্কে বাংলাদেশী ছাত্রদের আরো বেশি জানা দরকার এবং মিডিয়াতে আসা দরকার। জার্মানি সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা হলো ই ইউ ভিসা (EU Visa)। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত যেকোনো একটি দেশের ভিসা থাকলে আপনি সেই ভিসা ব্যবহার করে যেতে পারবেন অন্যান্য দেশেও। এক্ষেত্রে চাকরি, গবেষণা বা ভ্রমণের জন্য ইইউভুক্ত দেশ গুলোকে এক দেশ হিসেবে ভাবতে পারেন।
এপ্লাই করার ধাপসমূহ
১। কোর্সসার্চ : পড়ার জন্য বিভিন্ন কোর্স খোঁজার জন্যে সরাসরি আমাদের ওয়েব এ জার্মানি পেজে স্যাম্পল দেখতে পারেন ।
২। কোর্স বাছাই : জার্মানিতে শুধু না, বাইরের যে কোনো দেশে পড়তে যাওয়ার আগে অবশ্যই দেখে নেয়া লাগে যেসব বিষয়ে আপনি পড়তে ইচ্ছুক।
৩। ভাষা : অনেক সাবজেক্ট আছে জার্মান ভাষায়, অনেকেরই হয়তো জার্মান ভাষার কোর্স করা থাকতে পারে, তবে আমার পরামর্শ জার্মান ভাষার সাবজেক্ট গুলো আমাদের জন্য কঠিনই হবে। কারণ টিচারের লেকচার বুঝতে হবে ভিন দেশি ভাষায়, আবার পরীক্ষার খাতায় বুঝাতে ও হবে সেই ভাষায়। উপরের লিঙ্কে সার্চ করে যেকোনো প্রোগ্রাম পেজ এ ঢুকলেই Course Language দেয়া থাকে। যে লিঙ্কটা দেওয়া হল তাতে সব ইংরেজী ভাষার কোর্স। কারো যদি ইচ্ছা হয় জার্মান ভাষায় পড়ার তাহলে All study programmes in Germany এই লিঙ্কে গেলে জার্মান, ইংরেজী সব মাধ্যমের সাবজেক্ট এক সাথে পাওয়া যাবে।
৪। ভর্তি সেমিস্টার এই ব্যাপারটা কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেয়া থাকে Winter Semester only অথবা Summer semester only ev Both semester দেয়া থাকে। এটা অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। Beginning of program, Program duration এগুলোও লিঙ্কে দেয়া থাকে। আর Application Deadline তো অবশ্যই দেখা উচিত। Description of Content এই জিনিস টাহাল্কা দেখে নেয়া ভালো, ভিসার ক্ষেত্রে ইন্টারভিউতে এটা অবশ্যই কাজে লাগবে (যদি বাঙ্গালী ইন্টারভি উয়ার থাকে তাহলে তো এটা জানতেই হবে) সাথে সাথে এর ঠিক নিচে Course Description (Read More) – এইটা পড়তে হবে, অন্তত পক্ষে কত ক্রেডিটের কোর্স তা জানার জন্যে।
৫। টিউশন ফি এইটা হলো পেজের সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ দেখার বিষয়। টিউশন ফি, এন রোলমেন্ট ফি অনেক ভার্সিটিতে লাগেনা, কোথাও আবার লাগে প্রতি সেমিস্টার ৫০০-৭০০ ইউরোর মত। তবে কিছু সাবজেক্ট, যেমন- এরো¯েপস, লাগে ২ বছরে ২০০০০ ইউরো+ ভ্যাট। Cost of Living ৮০০ ইউরো দেয়া থাকলে ও জার্মানিতে ৫০০ ইউরো অনেক যথেষ্ট। মিউনিখের মত বড় শহর গুলোতে খরচ একটু বেশি, তবে ৫০০ রবেশি না। খরচের একটা ব্যবচ্ছেদ জানলাম মিউনিখের একসিনিয়রের কাছ থেকে খাওয়া ৬০+ হেলথইন্সুরেন্স ৮০+ বাসাভাড়া ৩০০+ বিবিধ ৩০। বেশি বেশি করে ধরেই বললাম এটা। অনেকের মনেই হয় তো প্রশ্ন জাগবে ট্রান্সপোর্টেশনের খরচ কই? এখানেই হলো টিউশন ফি রমজা। টিউশন ফি অনেক ভার্সিটিতে নেয়া হয় স্টুডেন্ট ইউনিয়নের জন্যে, এরা আবার বাস-ট্রামের অথরিটির সাথে চুক্তি করে রাখে। স্টুডেন্টদের একটা কার্ড দেয়া হয়, এটা সাথে নিয়ে চললে ট্রান্সপোর্টেশন খরচ নাই। আবার ক্যান্টিনে ডিস্কাউন্টে খাওয়া ও যাবে এইকার্ড দেখিয়ে। কিছু ভার্সিটি আবার কোনোটিউশন ফিনা নিয়েই এই সুবিধা গুলো দেয়। এখানে আবার ফান্ডিং নিয়েও তথ্য দেয়া থাকে, যেমন ইন্টার্নশীপ অপর চুনিটি, স্কলারশিপ ইত্যাদি।
৬। যোগ্যতা: IELTS, TOEFL লাগবে কিনা, কত লাগবে এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় এ সেকশনে। মজার ব্যাপার হলো, আমরা চার বছর ইংলিশ মিডিয়ামেই পড়ি, এই জন্যে অনেক ভার্সিটিই IELTS, TOEFL চায়না। তবে হাই র্যাঙ্কড ভার্সিটি গুলো চাইতে পারে, ইভেন Gre-BI। আর সেইফ সাইডে থাকার জন্যে IELTS, TOEFL, এজঊ করা থাকলে গ্রহণ যোগ্যতা ও বাড়ে, ভিসাতে ও সুবিধা হয়। তবে এ গুলা করার ভয়ে এপ্লাই করা থেকে বিরত থাকাটা ও বোকামি। অনেক ভার্সিটি আবার হয়তো ইন্টারভিউ ও নিতে পারে।
৭। এপ্লাইকরা এই সব গুলো বিষয় মন মতো হলে পেজের উপরের দিকে ডানপাশে Contact ev Submit Application to থেকে এড্ড্রেস নিয়ে এপ্লাই করা শুরু করতে হবে। বেশির ভাগ ভার্সিটির অনলাইনে এপ্লাই করার সু্েযাগ আছে। তবে যাই হোক, হার্ড কপি অবশ্যই পাঠাতে হবে (ব্যাতিক্রমও হতে পারে)। আরেকটা ব্যাপার, ২০ দিনের বেশি সময় হাতে থাকলে হার্ডক পিসর কারি ডাকেই পাঠানো ভালো, মাত্র ২০০ টাকার মত খরচ হয়, সময় লাগে ৭-১৫ দিন। আর সার্টিফাইড ফটোকপি নিয়ে ও একটা কনফিউশন হয় কমনলি, কেউ বলে ট্রুক পিদিতে হবে আবার কেউ বলে নোটারাইজড কপিই এনাফ। এটা এক টুখোঁজ খবর নিয়ে দেয়া ভালো। জার্মান এম্বাসিতে গিয়ে ফ্রি এটেস্টেড করানো যায়, তবে হাতে ৭ দিন সময় নিয়ে সেটা করাটা ভালো। এপ্লাই করা শেষ হলে এরপর হয়তো সর্বোচ্চ ২ মাস পর্যন্ত ও ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। সময় কাটানোর জন্যে যারা জার্মান ল্যাক্সগুয়েজ কোর্সে ভর্তি হওয়া যায় কিং বা, Rosetta Stone – German Language Course সফটওয়ারটা ডাউনলোড করে ঘরে বসে জার্মান ভাষা র্প্যাকটিস করা যায়।
৮। ভিসা ও অন্যান্য: ভার্সিটি থেকে অফার লেটার মেইলে আসার সাথে সাথে German Embassy Dhaka এখান থেকে টেলিফোন নাম্বার নিয়ে ভিসা এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ফেলতে হবে, যারা ঢাকায় থাকে তারা ফোন না করে সরাসরি এম্বাসিতে চলে যাওয়া উচিত। অবশ্যই ৬-৭ সপ্তাহ সময় হাতে রেখে ভিসার জন্যে এপ্লাই করতে হবে।
সিমুল্ট্যনাসলি আরো একটা জিনিস করে রাখতে হবে। সেটা হলো ব্লকড একাউন্ট। ব্লকড একাউন্ট নিয়ে আবার অনেকের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে , এখান থেকে প্রয়োজন না হলে ১ টাকা ও তোলা লাগেনা, যদি না কেউ জার্মানিতে গিয়ে কোনো কাজ না করে মাসে মাসে এখান থেকে টাকা তুলে খাওয়ার প্লান করে। এইটা জাস্ট একটা ভিসা ফরমালিটি। টাকা পয়সা রেডি থাকলে ব্লকড সার্টিফিকেট দিতে ১ দিন মাত্র সময় লাগে ব্যাঙ্কের। এই ব্লকড সার্টিফিকেট আর উপরের পিডিএফ ফাইলের কথা মতো সব সার্টিফিকেট (ইনক্লুডিং Registration Card, Admit Card of S.S.C & H.S.C), ফটোকপি (২ কপি থাকলেও আসলে ৩ কপি নিতে হবে) এবং ফরম ২ কপি ফিলাপ করে প্রিন্ট করে নিয়ে যেতে হবে ভিসা ইন্টারভিউয়ের দিন এম্বাসিতে। অনেক সময় নাকি এম্বাসি এগুলো আগেই জমা নেয়।